Breaking News

ট্রাম্প জেতায় দেশ ছাড়ার ঘোষণা

টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের জীবনে এক অদ্ভুত দুঃখের অধ্যায় চলছে। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর মাস্কের ট্রান্সজেন্ডার কন্যা ভিভান জেনা উইলসন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের ঘোর সমর্থক ইলন মাস্ক থেকে কন্যা জেনা নিজেকে বাবার রাজনৈতিক ও সামাজিক আদর্শ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন। ২০ বছর বয়সী জেনা উইলসন, যিনি ২০২২ সালে বাবা মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক চূড়ান্তভাবে ছিন্ন করেছিলেন, তখনই নিজের নাম পরিবর্তন করে এক নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। বাবা-মেয়ের সম্পর্কের এই তিক্ততা বহুদিন ধরেই আলোচনায় ছিল, কিন্তু এবার তা যেন এক শেষ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। ট্রাম্পের জয় তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তে প্ররোচিত করেছে।

বুধবার (৬ নভেম্বর) থ্রেডসে এক আবেগঘন পোস্টে জেনা লিখেন, ‘গতকাল আমি মনস্থির করে ফেলেছি। যুক্তরাষ্ট্রে আর কোনো ভবিষ্যৎ দেখি না।’ ইলন মাস্কের ছয় সন্তানের মধ্যে জেনা একমাত্র সন্তান যিনি সম্পূর্ণ ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। ইলন মাস্ক বরাবরই ট্রাম্পের সমর্থক ও রক্ষণশীল চিন্তাবিদদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু জেনার মতে, মাস্ক এমন এক বাবা ছিলেন যিনি ‘থেকেও না থাকার মতো।’ মাস্ক কখনোই তার ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি।

মেয়ের এই দূরে সরে যাওয়া সম্পর্কে মাস্কও খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেন, বেসরকারি স্কুলগুলো মেয়ের চিন্তাভাবনাকে এ ‘ভাইরাস’ দ্বারা সংক্রমিত করেছে। তিনি মনে করেন, ক্রসরোডস স্কুল ফর আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস নামের প্রতিষ্ঠানই জেনার মনে সমাজতান্ত্রিক ভাবনা ঢুকিয়ে দিয়েছে, যা ধনী মানুষদের প্রতি একপ্রকার বিরূপ মনোভাব তৈরি করেছে।

বাবা ইলন মাস্ক আরও বলেন, ‘প্রথম সন্তান নেভাডার মৃত্যুর চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার কারণে। আমি কথা বলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু ও আমার সঙ্গে থাকতে চায় না।’ রক্ষণশীল চিন্তাবিদ জর্ডান পিটারসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক নিজের এ অনুভূতি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি এবং জেনাকে তিনি মৃত বলেও উল্লেখ করেন। অপরদিকে, জেনা এনবিসি নিউজকে জানান, প্রায় চার বছর ধরে তিনি বাবার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি। এদিকে বাবা-মেয়ের মধ্যে মতাদর্শগত এই যুদ্ধ যেন ব্যক্তিগত সম্পর্ককেও ছাড়িয়ে গেছে। দুই প্রজন্মের দুই ভিন্ন দর্শন, রক্ষণশীলতা বনাম প্রগতিশীলতা এ দ্বন্দ্ব একসময় তাদের সম্পর্ককে এক অতল গহ্বরে টেনে নিয়ে গেছে। মা, মেয়ে ও বাবার মধ্যে এ দুঃখজনক ভাঙন যেন এক শৈল্পিক ট্র্যাজেডির মতোই দৃশ্যমান, যেখানে প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে একধরনের বেদনাবোধে আচ্ছন্ন। মাস্কের মতো একজন খ্যাতিমান ব্যক্তির জীবনে এমন এক ব্যক্তিগত সংকট তাকে আরও মানবিক করে তোলে, যেখানে রাজনৈতিক বিশ্বাস, সামাজিক আদর্শ এবং পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতার মধ্যে আটকা পড়ে একটি পারিবারিক সম্পর্কের করুণ পরিণতি ঘটে।

সূত্র: কালবেলা

Check Also

এবার যে চমক দেখালেন ড. ইউনূস!

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। কিন্তু এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *