‘সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র ছিলেন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি পত্রিকায় যেমন মাদকের বিরুদ্ধে লিখেছেন, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রায়ই মাদকের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন। এ নিয়ে ময়মনসিংহ সদরের মাঝিপাড়ার মাদকবিক্রেতা সাগরের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক বছর আগেও স্বপন কুমার ভদ্রের ওপর সাগর হামলা করেছিল। সম্প্রতি ফেসবুকে মাদক নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় সাগর ক্ষুব্ধ হয়ে স্বপন কুমার ভদ্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। সাগরকে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে।’
শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) আজিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এ বিষয়ে এসপি আরও জানান, বিষয়টি আরও তদন্ত করে এর সঙ্গে আরও কোনও ঘটনা আছে কিনা তা জানা যাবে।
উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়ার টানপাড়া এলাকায় শনিবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্রের বাসার সামনে মাদক বিক্রেতা সাগর তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫) তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি। তিনি আগে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকায় তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। বর্তমানে তিনি কোনও গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। স্বপন কুমার ভদ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, লেখালেখির জেরে স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যা করা হয়েছে। বছরখানেক আগেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সাগর মিয়া (১৮) নামে এক মাদক বিক্রেতাকে আটক করেছে। সাগর উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
নিহত ব্যক্তির ভাতিজা জুয়েল ভদ্র বলেন, ‘নিজ বাসার সামনে বসে ছিলেন চাচা (স্বপন ভদ্র)। ওই সময় তাকে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। বাঁ-হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। চাচির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
নিহত স্বপন কুমার ভদ্রের ভাগনে মানিক সরকার বলেন, ‘মাদক নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন লেখালেখি করেন, সেজন্যই রাগ ছিল। এ কারণে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।’ এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।